সেনাপ্রধানের জরুরি মতবিনিময় সভা
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হতে যাচ্ছে?
কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি সভায় সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে ঢাকা, মিরপুর ও সাভারে কর্মরত সকল কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সূত্র জানায়, জরুরি মতবিনিময় সভায় সেনাপ্রধান কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে দেশ জুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট বেড়ে যাবে। তাই ক্ষমতার হস্তান্তর হলে তা শান্তিপূ্র্ণভাবে হতে হবে।
সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনী গুলি করার জন্য নামেনি। বিক্ষোভ সমাবেশ করার অধিকার সবার আছে। আমরা জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করতে নেমেছি। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো সহিংস পদক্ষেপ নেব না। আমরা আর কোনো গুলি ছুড়বো না।
সেনাপ্রধানের বরাতে একটি সেনা সূত্র জানিয়েছে তিনি বলেছেন, আমি জানও রক্ষা করবো, মালও রক্ষা করবো...আরেকজনের দোষ আমি কাধে নিবো না।
জেনারেল ওয়াকার উজ জামান বর্তমান পরিস্থিতি তৈরির জন্য পুলিশ বাহিনীকে দায়ী করেন।
সূত্র জানায়, সভায় এক কর্মকর্তা প্রশ্ন করেন, সেনাবাহিনীর গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনটি কীভাবে মানা সম্ভব?
জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, অনেক বিক্ষোভকারী গুলিতে নিহত হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে এমন ঘটতেই পারে। আমাদের শান্ত থাকতে হবে। পুলিশ নির্বিচার গুলি না করলে এমন পরিস্থিতি হতো না।
সেনা সূত্র বলছে, আজকের মতবিনিময়ে একজন সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন তার স্ত্রী তাকে প্রশ্ন করেছেন, কেন সে ছাত্রদের উদ্দেশে গুলি চালিয়েছে?
পরে এ নিয়েও কিছু আলোচনা হয়। বৈঠক এরই মধ্যে শেষ হয়েছ। সেনাপ্রধানের গণভবনে যাওয়ার কথা। সেখানে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সেনা সদর এক জরুরি বার্তায় এ মতবিনিময়ের জন্য ঢাকা, মিরপুর ও সাভার সেনানিবাস থেকে মোতায়েনকৃত সকল কর্মকর্তাকে স্বশরীরে ‘কম্ব্যাট’ পোশাকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয়।
ঢাকা ও সাভার সেনানিবাসের বাইরে অন্যন্য সকল এরিয়া, ফরমেশন ও স্টেশনের কর্মকর্তাদের অনলাইনের মাধ্যমে এই মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে মিলিটারি অপারেশন পরিদপ্তরকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।