জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মানুষের আস্থা বাড়াতে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আজ শনিবার আন্তর্জাতিক এই দাতা সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সহযোগিতা দেশের আর্থিক খাতে করপোরেট সুশাসন ও স্থিতিশীলতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গায়েল মার্টিন বলেন, ‘সরকারি অর্থ কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উন্মক্ত ও জবাবদিহিতার মধ্যে রাখতে সরকার বিভিন্ন উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে তারা মানুষকে আরও ভালোভাবে সেবা দিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরও শক্তিশালী ও জনবান্ধব অর্থনীতির জন্য বিভিন্ন নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করার সরকারি চেষ্টায় এই ঋণ সহায়ক হবে। সরকারকে এসব সংস্কারে সহায়তা করতে গত সপ্তাহেও আমরা এ ধরনের একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
সংস্থাটি জানায় বর্তমানে, মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম, যা জনগণের কাছে মানসম্পন্ন পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে সীমিত করে। এই কর্মসূচি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতির লক্ষ্যে সংস্কারগুলোকে সমর্থন করে।
এই সংস্কারগুলো আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে কর প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারণকে আরও স্বচ্ছ এবং দক্ষ করে তুলবে। এছাড়াও, এটি কর ছাড় পরিচালনার জন্য আরও কৌশলগত, নিয়মতান্ত্রিক এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য সংস্কারগুলোকে সমর্থন করবে যার জন্য সমস্ত ছাড়ের জন্য সংসদীয় অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
এরআগে গেল ১৯ জুন বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ অবকাঠামো ও দুষণ রোধে বায়ুমান উন্নয়নে ৬৪ কোটি ডলারের দুটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জ্বালানি খাতে নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার জন্য ব্যয়-সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার করতে ৩৫ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বায়ুমান উন্নয়ন প্রকল্পে ২৯ কোটি ডলার দেওয়া হবে।
জ্বালানি খাত নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) একটি গ্যারান্টি ব্যবহার করে সাত বছরের মধ্যে ২১০ কোটি ডলার পর্যন্ত বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। এর ফলে নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি সম্ভব হবে।
মূলত, বাংলাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করা হয় তার এক-চতুর্থাংশেরও বেশি অংশ এলএনজি আমদানিনির্ভর। এ ছাড়া, দেশের মোট গ্যাসের প্রায় ৪২ শতাংশ বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহার হয়, তাই সরবরাহে ঘাটতি হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।