যাত্রী নেই, ভারতগামী ফ্লাইট কমিয়ে লোকসান কমানোর চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ পিএম
শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পালিয়ে দেশ ছেড়েছেন। এর পরপরই ভারত ভিসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কিছুদিন পর সীমিত আকারে ভিসা কার্যক্রম চালু করে। তবে ভিসাপ্রাপ্তির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এতে ঢাকা থেকে ভারতের বিভিন্ন রুটে চলা এয়ারলাইন্সগুলো ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, ভারতের ভিস্তারা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো। তারা ঢাকা থেকে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই ও মুম্বাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে।
তবে যাত্রী খরায় বেশিরভাগ দেশি কোম্পানি ফ্লাইট কমিয়েছে। আবার কোনো-কোনো রুটে ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণাও এসেছে।
এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, ভিসা না পাওয়ায় যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভিসা থাকলেও বিমানবন্দরে ‘হয়রানি; বা আটকের ভয়ে অনেকে ভারতমুখী হচ্ছেন না।
এয়ারলাইন্সগুলো জানিয়েছে, এয়ারলাইন্সভেদে ঢাকা থেকে কলকাতা রুটের ভাড়া ১২ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা। যাত্রী কম হওয়ায় বিমান পরিচালন ব্যয় তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে যাত্রী কম হওয়ায় আমরা পরিকল্পনা করে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছি। আগে কলকাতায় প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট ছিল। তবে এখন একটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগে দিল্লিতে সপ্তাহে ৩টি ফ্লাইট ছিল। তবে এখন একটি রয়েছে। এছাড়া চেন্নাইতেও তিটির পরিবর্তে এখন সপ্তাহে একটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ার আগে ঢাকা থেকে কলকাতা রুটে সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করত। তারা ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে তিনে নামিয়েছে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্তও হয়েছে।
নভোএয়ারের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস মেসবাউল ইসলাম জানান, ফ্লাইটগুলোতে যাত্রী অর্ধেকেরও কম। এজন্য কলকাতা রুটে ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ফ্লাইট চালু করা হবে।
এয়ারওয়েজ নামের একটি ট্রাভেলস কোম্পানি ভারতীয় ভিস্তারা এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশে টিকেট বিক্রি করে। প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল মার্কেটিং কর্মকর্তা আবদুল মোত্তালিব বলেন, মানুষ ভিসা না পেলে যাবে কীভাবে?
আগে কলকাতা রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সপ্তাহে ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ১৪টি এবং চট্টগ্রাম থেকে সাতটি ফ্লাইট যেত। বর্তমানে তারা ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আর ঢাকা-চেন্নাই রুটে সপ্তাহে ১১টি ফ্লাইট থেকে কমিয়ে পাঁচটি করা হয়েছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা জানান, সাবেক সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই আকাশপথে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছেন। আবার এখনও করছেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। একাণে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ঝামেলা এড়াতে যাত্রীরা অনেকেই প্রয়োজন থাকলেও এই মুহূর্তে ভারতমুখী হচ্ছেন না।