Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিএনপি–জামায়াতের ৫০ জনসহ ১২৩ ‘চাঁদাবাজের’ তালিকা নিয়ে তোলপাড় রাজশাহীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ০২:০৪ পিএম

বিএনপি–জামায়াতের ৫০ জনসহ ১২৩ ‘চাঁদাবাজের’ তালিকা নিয়ে তোলপাড় রাজশাহীতে

রাজশাহীতে একটি চাঁদাবাজদের তালিকা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তালিকায় উল্লেখ আছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ১২৩ জনের নাম—তাদের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৪৪ জন, আওয়ামী লীগের ২৫ জন এবং জামায়াতের ৬ জন রয়েছেন। এছাড়া কিছু ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তাদের ‘সুবিধাবাদী’ বলা হয়েছে।

এই তালিকার বিষয়টি সামনে আসার পর বিএনপির নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। দলটির দাবি, একটি আবাসন ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় ছাত্রদল-যুবদলের কিছু নেতাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এই মামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

তালিকাটি কারা তৈরি করেছে—তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিএনপির নেতারা বলছেন, এটি পুলিশের তৈরি, যদিও তালিকায় পুলিশের কোনো স্বাক্ষর নেই। এ প্রসঙ্গে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান জানিয়েছেন, তালিকা যদি পুলিশ করে থাকে, তা অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ছিল এবং এভাবে ছড়িয়ে পড়ার কথা নয়। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্যি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তালিকায় ছাত্রদলের একজন নেতার বিরুদ্ধে কোচিং সেন্টার ও মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ তোলা হয়েছে। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও একাধিক নেতার বিরুদ্ধেও ফুটপাত, মার্কেট ও সরকারি প্রকল্পে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ আছে। জামায়াতের এক নেতার বিরুদ্ধে গণমাধ্যম কর্মীদের হুমকি, ভূমি দখল এবং মাদক ব্যবসার অভিযোগও উত্থাপন করা হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল ইসলাম বলছেন, পুরো তালিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অনেক নির্দোষ ব্যক্তির নামও এতে রয়েছে। তিনি বলেন, প্রকৃত অপরাধীরা ধরা পড়া উচিত, কিন্তু উদ্দেশ্যহীনভাবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ফাঁসানো ঠিক নয়।

এদিকে জামায়াতের মহানগর সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মণ্ডল জানান, যাদের নাম তালিকায় রয়েছে, তারা সংগঠনের সঙ্গে আর সম্পৃক্ত নন। নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা এই ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন। তারপরেও কিছু ব্যক্তি সুযোগ পেলে ছবি তুলে প্রচার করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই তালিকাকে ঘিরে রাজশাহীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো একে রাজনৈতিক হয়রানি বলছে, আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ ছাড়া কোনো অভিযোগেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ তালিকাকে সময়োপযোগী মনে করলেও, অনেকেই বলছেন, তদন্ত ছাড়া কারও নাম প্রকাশ করা অনৈতিক।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন