Logo
Logo
×

সারাদেশ

চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের রহস্য উদঘাটন

Icon

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১২ পিএম

চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের রহস্য উদঘাটন

চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা জাহাজের মাস্টারের ওপর ক্ষোভ থেকে তাকে হত্যা করে গ্রেপ্তারকৃত আকাশ মন্ডল ইরফান। পরে জাহাজে থাকা অন্য সদস্যরা বিষয়টি ফাঁস করে দিতে পারেন, এই আতঙ্কে বাকি সাতজনকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তবে এ ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান জাহাজের সুকানি জুয়েল। গ্রেপ্তার ইরফানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আজ বুধবার কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব-১১। 

সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ইরফান প্রায় ৮ মাস ধরে এমভি-আল বাখেরা জাহাজে চাকরি করছিলেন। ওই জাহাজের কর্মচারীরা ছুটি ও বেতন-বোনাস সময় মতো পেত না এবং বিভিন্ন ধরনের বিল কর্মচারীদের না দিয়ে জাহাজের মাস্টার একাই ভোগ করত। জাহাজের মাস্টার সব কর্মচারীর ওপর বিনা কারণে রাগারাগি করত এবং কারোর ওপর নাখোশ হলে তাকে কোনো বিচার বিবেচনা ছাড়াই জাহাজ থেকে নামিয়ে দিত এমনকি তাদের বকেয়া বেতনও দিত না।

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে গ্রেপ্তার আসামি ইরফান জাহাজের সবাইকে প্রতিবাদ করতে বললে কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করত না। মাস্টারের এমন কার্যকলাপের কারণে তার মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং এই ক্ষোভ থেকে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী আনুমানিক ১৮ ডিসেম্বর ইরফান ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে নিজের কাছে রেখে দেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আকাশ ঘটনার দিন সন্ধ্যায় জাহাজে রাতের খাবারের তরকারির মধ্যে ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। শুধু সুকানি জুয়েল এবং গ্রেপ্তার আকাশ ছাড়া সবাই রাতের খাবার খেয়ে তাদের নিজস্ব কেবিনে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সাহারা বিকন এলাকায় আরও ৮-১০টি জাহাজের সঙ্গে সুকানি জুয়েল এবং গ্রেপ্তার আকাশ তাদের জাহাজটি নোঙ্গর করে। পরবর্তীতে সুকানি জুয়েল রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আকাশ তার পরিকল্পনা মোতাবেক আনুমানিক রাত ৩টার দিকে প্রথমে মাস্টারকে জাহাজে থাকা চাইনিজ কোড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। 

তিনি বলেন, পরবর্তীতে সে চিন্তা ভাবনা করে যে, জাহাজে থাকা বাকিরা জেনে গেলে সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধরা পড়বে বিধায় একে একে সবাইকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আনুমানিক ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সব জাহাজ তাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলে সে নিজে জাহাজ চালাতে থাকে এবং এক পর্যায়ে মাঝিরচর নামক এলাকায় জাহাজটি আটকা পড়লে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ট্রলারে বাজার করার কথা বলে ট্রলারে উঠে পালিয়ে যায়। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে বাগেরহাটে চিতলমারি এলাকায় আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় র‍্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারি থেকে ইরফানকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্লাভস, একটি ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, নিহত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি ও তার নিজের ব্যবহৃত দুটিসহ মোট সাতটি মুঠোফোন এবং বিভিন্ন জায়গায় রক্ত মাখানো নীল রঙের একটি জিনস প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ওই জিনস প্যান্ট পরিহিত ছিল ইরফান। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন