কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতার অনুষ্ঠানে অতিথি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ (গোল চিহ্নিত) বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণকচুরি গ্রামে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো সেই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও যুবলীগ নেতা হুমায়ুন আহমেদ এবং সদর উপজেলা ছাএলীগের সহ-সভাপতি আল-আমিন।
জানা গেছে, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাক্ষ্মণকচুরি গ্রামে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে অনুষ্ঠানে সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমনকে প্রধান অতিথি করা হয়। খেলা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।
খেলার সময় মঞ্চে বসা নেতাদের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ালে শুরু হয় বিতর্ক। যেখানে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ। ছবিতে দেখা গেছে, খেলা শেষে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন সাবেক ছাত্রলীগের এ নেতা। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন উপস্থিতও ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, হুমায়ুন আহমেদ কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের লিমন-আশরাফের কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিতি। হুমায়ুন একটি মন্ত্রণালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি করেন। আল-আমীন সদর উপজেলা ছাএলীগের সভাপতি রিফাত উদ্দিন আহমেদ বচ্চন মিয়ার সঙ্গে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
এই ব্যাপারে রশিদাবাদ ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি ছিলেন জহিরুল ইসলাম সুমন। অতিথি সবাইকে আমি চিনি না।
খেলায় ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি জানতে চাওয়া হলে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সুমন বলেন, এলাকাবাসী খেলার আয়োজন করেছে। আমরা অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। ১৭ হাজার টাকা মূল্যের এলইডি টিভি অতিথি হিসেবে আমরা দিয়েছি। এ ছাড়া যারা খেলেছে তারা ১২ হাজার টাকা দিয়ে একটা এলইডি টিভি কিনেছে। সেখানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কেউ ছিল না। সবাই বিএনপির নেতা ছিল।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করছেন, রশিদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়ার অনুসারী। সেই দাপটে সিরাজুলসহ স্থানীয় কয়েকজন নেতা বিএনপির হাই কমান্ডের কড়া বার্তা অবজ্ঞা করছেন। তারা নিজেদের গ্রুপ ভারি করতে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন এবং ৫ আগস্টের পর থেকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে দল ভারি করতে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। এতে বিগত সময়ে বিএনপির যারা আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
বিএনপির নির্যাতিত নেতা-কর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দলের হাই কমান্ডদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আওয়ামী পুনর্বাসন করতে না পারে।