Logo
Logo
×

বিশ্লেষণ

ইউনূস পদত্যাগ করলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ কী হবে—আইনজ্ঞদের ব্যাখ্যায় নানা মত

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ০৯:৩২ এএম

ইউনূস পদত্যাগ করলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ কী হবে—আইনজ্ঞদের ব্যাখ্যায় নানা মত

আটই অগাস্ট শপথ নেন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যদি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে দেশের শাসনব্যবস্থা কোন পথে যাবে—এই প্রশ্নে চলছে জোর আলোচনা। আইনি দিক থেকে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পথ কতটা খোলা, তা নিয়েও আইনবিদদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে।

এই আলোচনার সূচনা হয় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের এক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, যেখানে তিনি জানান যে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, যেহেতু বর্তমান সরকার সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছিল, তাই ইউনূস পদত্যাগ করলে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন সম্ভব। অনেকে আবার বলেন, এই সরকারের পেছনে সাংবিধানিক ভিত্তি নেই—তাই এ ধরনের পরিবর্তনের জন্য সংসদের অনুমোদন বা গণসংলাপ প্রয়োজন।

শাহদীন মালিক বলেন, “বর্তমান বাস্তবতায় আইনের ভাষ্য অনেকটাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। কারণ সবকিছু এখন আইনবহির্ভূতভাবে পরিচালিত হচ্ছে।” তিনি মনে করেন, আদালতের কোনো সুস্পষ্ট রেফারেন্স বা সংসদীয় অনুমোদন ছাড়াই যেভাবে সরকার গঠিত হয়েছে, তাতে নতুন সরকার গঠনেও সাংবিধানিক বাধা তেমন থাকবে না।

এ বিষয়েও মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, যেহেতু উপদেষ্টারা প্রধান উপদেষ্টার মনোনয়নে দায়িত্বে ছিলেন, তাই ইউনূস সরে দাঁড়ালে তারাও আর দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। অন্যদিকে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ইচ্ছায় আগের উপদেষ্টারাই থেকে যেতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, এখন নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা যেহেতু সর্বাধিক, তাই নতুন করে পূর্ণাঙ্গ অন্তর্বর্তী সরকার না গড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামেই একটি নির্বাচনকালীন মডেল চালু করলেই চলবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “আমরা তিনটি দায়িত্ব নিয়েছি—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সব পক্ষ যার যা খুশি সেই দাবি নিয়ে রাজপথে নামছে, রাস্তাঘাট বন্ধ করছে।” এতে সরকারের কর্মকাণ্ড প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলেও তার মন্তব্য।

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “স্যার বলেছেন, যদি কাজ করতে না পারি, তাহলে থাকা মূল্যহীন।” ইউনূসের বক্তব্য ছিল, “রাজনৈতিক দলগুলো যদি এক জায়গায় না আসে, তাহলে আমি একা কীভাবে কাজ করব?”

এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, তিনি রাজনৈতিক ঐকমত্যের অভাবেই দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত বোধ করছেন এবং সেজন্য দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা বিবেচনায় রেখেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, চলমান সংকটের নিরসনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি। ইউনূস পদত্যাগ করলে তা যেন নতুন রাজনৈতিক অচলাবস্থার সূচনা না হয়, সেজন্য প্রয়োজন হবে সুসংহত ও বাস্তবভিত্তিক একটি রোডম্যাপ।

সূত্র: বিবিসি

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন